Close

শিউলিবেলা (পর্ব-০৫)

IMG 20250426 210016

IMG 20250426 210016

অতসী চিবিয়ে চিবিয়ে বললো,
-‘আমার এতো দামী গাউনটা আপনার কারনে ছিঁড়ে গেলো, আর আপনি বলছেন বিনাদোষে হাঙ্গামা করছি আমি? এই পার্টিতে এখন আমার ছেঁড়া জামা পরে ঘুরতে হবে, ব্যাপারটা আমার জন্য কতোটা লজ্জার বুঝতে পারছেন?’
ইশান কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে কিছু একটা ভাবলো, তারপর অতসীর গাউনের ছেঁড়া কোনাটা হাতে তুলে বললো,
-‘আরে এ তেমন কিছু না, রাস্তায় হাঁটার সময় আমার টি-শার্ট কতোবার এমন করে ছিঁড়েছে… তারপরও কিন্তু আমি সেই টি-শার্ট পরেছি। আপনি হাঁটলে তো এটুকু ছেঁড়া কারো চোখেই পড়বে না। আরে ছেঁড়া জামা পরায় একটা রাজা রাজা ভাব আছে বুঝলেন? সবাইকে দেখাবেন, আপনার সামর্থ্য আছে তাও আপনি ছেঁড়া জামা পরছেন। কারন আপনি এটুকু ছেঁড়ার জন্য জামাটা ফেলে দেন নি, আপনি বিলাশবহুল জীবন যাপন করেন না, আপনি মিতব্যয়ী। আপনাকে সবাই তখন অন্যচোখে দেখবে, আপনার কথা বিশেষভাবে ভাববে…’
ঈশানকে কথা শেষ করতে না দিয়েই সামনের দিকে হাঁটতে শুরু করলো অতসী। বিড়বিড় করে বললো, ‘বাসায় অরিত্রীর সমাজসেবা আর বাহিরে এ ছেলের মিতব্যয়ীতা… আজকের দিনটা এতো জঘন্য কেনো!’


আশ্রমের বাচ্চাদের ছড়া পড়াচ্ছে অরিত্রী, তার মুক্তোদানার মতো সাদা দাঁতগুলো বের করে হাসছে অনবরত। বাচ্চাদের সংস্পর্শে এক মুহূর্তের জন্য সে’ও যেনো বাচ্চা হয়ে গেছে। দূর থেকে দাঁড়িয়ে এক মধ্য বয়স্ক লোক সে দৃশ্য দেখছেন। আশ্রমের দেখাশুনা করেন জেবুন্নেসা বেগম নামের এক মহিলা, মধ্য বয়স্ক লোকটার পাশে এসে দাঁড়িয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
-‘হক সাহেব, এতো মনোযোগ দিয়ে কি দেখছেন?’
হাতের ইশারায় অরিত্রীকে দেখিয়ে মঈনুল হক বললেন,
-‘মেয়েটা ভারি মিষ্টি তো, কি সুন্দর বাচ্চাদের সঙ্গে মিশে নিজেও বাচ্চা হয়ে গেছে।
একটু থেমে আবার জিজ্ঞেস করলেন,
-‘আগে কখনো আশ্রমে দেখি নি তো, নতুন নতুন আসছে নাকি?’
-‘না, না… নতুন না। প্রায়ই আসে, এদিকেরই একটা হাইস্কুলে চাকরি করে। প্রায়ই স্কুলের পর এখানে এসে বাচ্চাদের সঙ্গে খেলা করে, বুড়ো মানুষগুলোর সঙ্গে গল্প করে, মজা করে। এখানকার বাচ্চা-বুড়ো সকলেই মেয়েটাকে চোখে হারায়…’
-‘তাই নাকি!’
মুচকি হাসলেন মঈনুল হক, ছোট ছেলেটার জন্য তিনি তো এমন প্রাঞ্জল মেয়েই খুঁজছেন। বড় ছেলেটাকে নিয়ে তার ভাবনার কারন নেই, সে সব দিক দিয়েই পরিপক্ক। কিন্তু ছোটটা তো ছন্নছাড়া, তার জন্য এই মেয়েটির মতো সুবোধ বালিকা হলে মন্দ হয় না। জেবুন্নেসার দিকে তাকিয়ে বললেন,
-‘মেয়েটার সঙ্গে পরে একদিন আলাপ করিয়ে দেবেন আপা, এখন চলুন ডোনেশনের ব্যাপারে কথা বলা যাক। আজ আবার আমার একটু তাড়া আছে…’
জেবুন্নেসা অরিত্রীর দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন, মেয়েটাকে দেখলে তার নিজের পাঁচ বছরের মেয়ে অবনীর কথা মনে পড়ে। মেয়েটা ওই বয়সে এক নরপশুর পৈচাশিকতার স্বীকার হয়েছিলো। বিয়ের দুই বছর পর স্বামী মারা যায় জেবুন্নেসার, তারপর ওই অবনীই ছিলো তার একমাত্র সম্বল। কিন্তু তাকেও অকালে হারাতে হয়। ঠিক সে সময় আল্লাহর পাঠানো দূত এর মতো মঈনুল হকের সঙ্গে তার দেখা হয়ে যায়। আশ্রয়হীন জেবুন্নেসাকে তিনি এ আশ্রমে এনে চাকুরি দেন। প্রথম প্রথম জেবুন্নেসার মরে যেতে ইচ্ছা করতো, মনে হতো যে জীবনে কিছু নেই কি লাভ সেই জীবন রেখে! কিন্তু এখানে আসার পর মনে হলো আল্লাহ তার কাছ থেকে নির্ধারিত ভালোবাসার মানুষগুলোকে কেড়ে নিয়ে বিনিময়ে এক আকাশ সমান ভালোবাসা ঢেলে দিয়েছেন। সত্যিই সৃষ্টিকর্তা মহান, তাইতো তার পরিকল্পনা আমাদের স্বল্প মস্তিষ্কে ধরা দেয় না। আজ অবনী বেঁচে থাকলে অরিত্রীর বয়সেরই হতো, তাইতো মেয়েটাকে দেখলে জেবুন্নেসার চোখদুটো বারংবার ভিজে ওঠে। মন চায় কাছে টেনে গালে হাত বুলাতে, কপালে চুমু খেতে, গভীর মমতায় আলিঙ্গন করতে। কিন্তু ভয় হয়, মনে হয় যদি মেয়েটা রাগ করে বা ভুল বুঝে! তাই মনের সুপ্ত বাসনা মনেই চাপা পড়ে যায়, সব ইচ্ছেকে তো আর সবসময় আশকারা দেয়া যায় না…


বসার ঘরের টেবিলের উপর এক ঝুড়ি নেতিয়ে পড়া শিউলি ফুল দেখে মুখটা মলিন হয়ে গেলো অরিত্রীর। ঝুড়িটা হাতে নিয়ে অমিতের ঘরে উঁকি দিলো সে, দরজায় দু’বার টোকা দিয়ে মুচকি হেসে ভেতরে প্রবেশ করে বললো,
-‘এই ফুল কোথায় পেলি রে অমিত?’
অমিত হতাশ ভঙ্গিতে বললো,
-‘এসব তোর জন্য না, বড়পুর জন্য। তুই হাত দিলি কেনো এসবে? সকালে কেউ একজন দরজার বাহিরে রেখে গেছে। প্রেমপত্র, না মানে চিরকুটও আছে দেখ না…’
অরিত্রী ঝুড়িটা হাতড়ে একটা সবুজ রঙের চিরকুট পেলো। চিরকুটটায় লেখা, ‘আপনার সৌন্দর্যে নয়, আপনার চারিত্রিক গুণে মুগ্ধ আমি… তাই শরৎের প্রথম শিউলি দিয়ে আপনাকে সম্ভাষণ জানালাম।’ লেখাটা পড়ে অরিত্রী মুচকি হাসলো, অমিতকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলো,
-‘কাল আবার দিলে ফুলগুলো ফ্রিজে রেখে দিস তো, তাহলে আমি আসা অবধি যদি তাজা থাকে…’
অমিত বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলো,
-‘বড়পুর ফুল তুই নিয়ে কি করবি?’
অরিত্রী ভাইয়ের গাল আলতো টেনে বললো,
-‘আপুর ফুল নিলে ক্ষতি কি? তুই জানিস না, শিউলি ফুল আমার কতো প্রিয়? আচ্ছা, যে ফুল পাঠালো সে তার নাম লিখলো না কেনো বলতো?’
চিরকুটটা আবারো উল্টেপাল্টে দেখলো অরিত্রী, অমিত একটা অংক করতে করতে ঠোঁট উল্টে তাচ্ছিল্যস্বরে বললো,
-‘সিক্রেট এডমায়ারার মে বি… নাম লিখলে তো পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যাবে।’
অরিত্রী আর কিছু বলে না, মুখ ভার করে বাসি ফুলের ঝুড়িটা নিয়ে নিজের ঘরে চলে যায়। সে রাতে অরিত্রী চোখের পাতা এক করতে পারলো না, বারংবার মনে হলো, কে এই ফুল প্রেরক? কি তার পরিচয়? অরিত্রীর সঙ্গে কি করে মানুষটার পছন্দ মিলে গেলো! অরিত্রী ভেবেছিলো, তার জীবনে যদি কখনো সত্যিকারের ভালোবাসার মানুষ আসে তবে সে তার ভালোবাসার মানুষকে শিউলি ফুল দিয়ে ভালোবাসার কথা জানাবে… কিন্তু তার আগেই তো কেউ একই নিয়ম ব্যবহার করে ফেললো। কে এই অচেনা প্রেরক? যার চিন্তা-চেতনায় অরিত্রীর ভাবনার ছাপ আছে!
ফজরের নামাজ পড়ে বাড়ির পেছনের শিউলি গাছটার নিচে গেলো অরিত্রী। গাছতলায় চাদর বিছিয়ে চোখ বন্ধ করে চুপচাপ শুয়ে ছিলো সে, হঠাৎ বাইকের শব্দে তার ধ্যান ভাঙ্গে। যেদিক থেকে শব্দ আসছে সেদিকে ছুটে যায়, দেখে কেউ একজন বাইক চালিয়ে চলে যাচ্ছে। চেহারাটা দেখা হয় না অরিত্রীর, তবে গেটের সামনে এক ঝুড়ি শিউলি ফুল দেখে মনটা আনন্দে নেচে ওঠে। অজ্ঞাত লোকটির প্রতি কৃতজ্ঞতায় মনটা ভরে ওঠে। অরিত্রী পেয়েছে, এ বছরের প্রথম সদ্য ফোটা শিউলি ফুলের দেখা পেয়েছে। আজও ঝুড়িতে একটা চিরকুট পেলো অরিত্রী। তাতে লেখা, ‘অতসী, প্রথম দেখায় মনের আদান-প্রদান হওয়া কি সম্ভব? আপনার খবর জানি না, তবে আমার মনে আপনার জন্য একটা কুটির গড়ে উঠেছে। এ কুটির নামক স্থানটা বিশেষ, এ স্থানে আপনি ব্যাতীত অন্য কারো জায়গা হবে না।’ হঠাৎই অরিত্রীর মনটা খারাপ হয়ে গেলো, যে ফুল আর চিরকুট তাকে গতরাত ঘুমাতে দেয় নি, আজ সকালে ব্যকুল করে তুলেছে এর কিছুই তো তার জন্য নয়… সবটা অতসীর! প্রথমবারের মতো বাবা-মা এর বাইরে অন্য কারো জন্য অতসীকে হিংসে হলো অরিত্রীর, মনে হলো কেনো অন্য সবার মতো এই মানুষটাও অতসীতে মত্ত হলো? কেনো কেউ অরিত্রীকে দেখে না? কেনো সবাই অতসীর গুণমুগ্ধ? তবে কি আজীবন অতসীর আড়ালেই সুপ্ত হয়ে থাকবে অরিত্রী? কারো দৃষ্টিতে তার বিশেষত্ব ধরা পড়বে না? এ প্রশ্নগুলোর উত্তর কি আদৌ কারো কাছে আছে!


আশ্রমের গেটের সামনে আয়ানকে দেখে অবাক হলো অরিত্রী, তবে নিজেকে স্বাভাবিক রেখে জিজ্ঞেস করলো,
-‘তুমি এখানে? আন্টি ঠিক আছে তো?’
আয়ান আমতা আমতা করে বললো,
-‘আজ তোমায় খুঁজতে তোমাদের বাড়ির সামনে গিয়েছিলাম তখন অতসীর সঙ্গে দেখা হয়ে গেছিলো। মনে হয় আমাকে দেখে বেশ রাগ করেছে…’
অরিত্রী কিছু বললো না, কেবল নিরবে আয়ানের মন বোঝার চেষ্টা করলো। বেশি কিছুক্ষণ নিরবতার পর জিজ্ঞেস করলো,
-‘আপুকে তুমি এখনো ভালোবাসো?’
আয়ান কোনোপ্রকার ভণিতা না করেই উত্তর দিলো,
-‘হ্যাঁ, ভালোবাসি। অতসী আমার প্রথম প্রেম, তাকে ভুলে যাবার সাধ্য আমার নেই। কিন্তু…’
-‘কিন্তু কি?’
-‘দেখো অরিত্রী, অতসীর কাছে সম্পর্কের চেয়ে তার ক্যারিয়ার বড়। ওর আর আমার কখনোই কোনো ভবিষ্যত ছিলো না আর না কখনো হতে পারে। আমাকে এভাবেই জীবন পার করতে হবে। তোমার বোন আমার জীবনটা শেষ করে দিলো…’
অরিত্রী আয়ান আর অতসীর ব্যাপারে বিস্তারিত না জানলেও ওর ধারনা যেহেতু সম্পর্কটা অতসী ভেঙ্গেছে সেহেতু দোষটা তারই। কিন্তু নিজের বোন বলে কিছু বলতে পারে না সে। আরো কিছুক্ষণ নিরবতার পর আয়ান বললো,
-‘আমি ঢাকা ছেড়ে চলে যাচ্ছি অরিত্রী…’
কিছুটা অবাক হলো অরিত্রী, ক্ষীণস্বরে জিজ্ঞেস করলো,
-‘কোথায় যাচ্ছ আয়ান?’
-‘বরগুনা… অনেক চেষ্টার পর এ চাকরিটা পেয়েছি, পোস্টিং যেখানেই হোক চাকরিটা আমাকে করতেই হবে। তবে মাকে ছেড়ে যেতে কষ্ট হচ্ছে…’
-‘আন্টিকে একা রেখে যাচ্ছো? আন্টিকে কে দেখবে? তুমি চলে গেলে তো আন্টি একদম একা…’
-‘আসলে আমার এক খালাতো বোন আছে, নাম মিতালি। ওর স্বামী মারা গেছে দুই মাস হলো। এখনই শ্বশুরবাড়িতে কথা শুনতে হচ্ছে… তাছাড়া বাচ্চাও নেই যে শ্বশুরবাড়িতে খুঁটি মজবুত হবে। শ্বশুরবাড়িতে থাকতে চাচ্ছে না ও, আমি মায়ের কাছে এসে থাকার কথা বলতেই রাজি হয়ে গেলো। বুঝতেই পারছো, যখন যাবার কোনো জায়গা থাকে না তখন সবকিছুতেই রাজি হতে হয়।’
সম্মতিসূচক মাথা নাড়লো অরিত্রী, তারপর বললো,
-‘টাকা-পয়সা কিছু আছে? বরগুনা যাবে যে থাকবে কোথায়?’
-‘আমার এক বন্ধু আছে বরগুনায় থাকে। ওর বাড়ির ছাদের ঘরটা ফাঁকা, তো সেখানেই উঠছি আপাতত। অগ্রীম কিছু দিতে হবে না, প্রথম মাসে বেতন পেয়েই ভাড়া দেব।’
আয়ান নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, শুনে ভালো লাগলো অরিত্রীর। ব্যাগ থেকে পনেরোশ টাকা বের করে আয়নের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-‘শেষবারের মতো টাকা দিচ্ছি, আর যেনো দিতে না হয় তার ব্যবস্থা করতেই তো চেনা শহর ছেড়ে যাচ্ছো…’
আয়ান কিছু বলে না, কেবল শান্তভাবে অরিত্রীর হাত থেকে টাকাটা নেয়।


মাঝরাত অবধি বিছানায় গড়াগড়ি করেও ঘুম এলো না অরিত্রীর, মাথার কাছের জানলাটা খুলতেই শিউলি ফুলের সুবাস এসে লাগলো নাকে। মুহূর্তেই অরিত্রীর মনোজগৎ মুগ্ধতায় ভরে গেলো। সময় নিয়ে সাজলো সে, তারপর শিউলি গাছতলায় গিয়ে বসলো। হঠাৎ মনে হলো, একটা বই সঙ্গে থাকলে মন্দ হতো না। তবে এই জায়গাটা ছেড়ে যেতে মন চাইছিলো না তাই অরিত্রী আলস্যে গা এলিয়ে দিলো ঘাসের ওপর। কখন চোখের কার্নিশে ঘুম এসে হানা দিলো জানা নেই অরিত্রীর, তবে তার ঘুম ভাঙলো ফজরের আজানের মধুর ধ্বনিতে এবং ঝরে পরা শিউলি ফুলের স্পর্শে। উঠে বসতেই দেখলো, গায়ে একটা জাম রঙের চাদর জড়ানো। অরিত্রীর যতোদূর মনে পড়লো সে রাতে আসার সময় কোনো চাদর আনে নি সঙ্গে, তাছাড়া এ চাদরটা তাদের বাসার কারো নয়।
অরিত্রী চাদরটা খুলে পাশে রাখতেই চোখে পড়লো আগের দিনের মতো একটা ঝুড়ি, তবে আজকের ঝুড়িতে ফুল নেই আছে কেবল একটি চিঠি। তাতে লেখা,
‘ওগো পূর্ণিমার মোহময় চন্দ্রিমা,
তোমারো আলোকে আলোকিত এ ধরা
শিউলিতলায় ওই কে যায়,
আলোক বৃষ্টিতে নিজেরে ভেজায়!
রাতের আঁধারে এ কোন মায়ায়,
আমায় ফেলিলে আজীবনের দোটানায়!

চলবে…

নবধারা জল (যৌথ গল্পগ্রন্থ সম্পাদনা) সূর্যপ্রভা (উপন্যাস)

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Leave a comment
scroll to top