ভাত বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের প্রধান খাদ্যশস্য, কিন্তু একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে উদ্বেগজনক তথ্য—জলবায়ু পরিবর্তন ধানে আর্সেনিকের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে।
বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ প্রতিদিন ভাত খান—এটি গম বা ভুট্টার তুলনায় অনেক বেশি ব্যবহৃত খাদ্য। এই কারণে, বিজ্ঞানীরা তাদের সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে কিছুটা চিন্তিত। গবেষণায় দেখা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণতা এবং কার্বন ডাই অক্সাইড (CO₂) নিঃসরণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভাতে আর্সেনিকের মাত্রাও বাড়ছে।
ভাতে আর্সেনিকের উপস্থিতি নতুন কিছু নয়। এটি মূলত প্রাকৃতিকভাবে মাটিতে থাকে এবং ধানের শিকড়ের মাধ্যমে শীষে চলে আসে। যদিও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো কিছু মাত্রার মধ্যে আর্সেনিক থাকাকে সহনীয় বলে মনে করে, অনেক ক্ষেত্রে এই মাত্রা তার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে।
স্বল্পমাত্রার হলেও দীর্ঘমেয়াদে আর্সেনিক গ্রহণ মানবদেহে নানা রোগের কারণ হতে পারে, যেমন ক্যান্সার, হৃদরোগ, এমনকি ডায়াবেটিস। এ কারণেই বিজ্ঞানীরা ভাতে আর্সেনিক কমানোর উপায় খুঁজছেন এবং এমন কিছু রান্নার কৌশলও রয়েছে যা চালের আর্সেনিকের কিছুটা অংশ অপসারণে সহায়ক।
তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে ভবিষ্যতে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে। গবেষকরা চীনের চারটি অঞ্চলজুড়ে ১০ বছর ধরে ২৮ প্রজাতির ধান চাষ করে পরীক্ষা চালিয়েছেন। পরীক্ষায় দেখা গেছে, যদি কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ এবং তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, তাহলে ধানে আর্সেনিক জমার পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ে।
এর ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা একটি স্বাস্থ্যঝুঁকি মডেল তৈরি করেন এবং অনুমান করেন, কেবল চীনেই ভবিষ্যতে এই আর্সেনিকের কারণে প্রায় ১.৯ কোটির মতো ক্যান্সার সংক্রমণের ঘটনা ঘটতে পারে।
গবেষণার সহ-লেখক ও নিউ ইয়র্কের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক লুইস জিসকা বলেন, “অজৈব আর্সেনিক একটি প্রমাণিত কার্সিনোজেন, যা ফুসফুস, হৃদযন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি করে। আর জলবায়ু পরিবর্তনের দুটি মূল উপাদান—CO₂ বৃদ্ধি ও তাপমাত্রা বৃদ্ধি—এই সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলছে।”
যদিও গবেষণাটি চীনের নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে পরিচালিত হয়েছে, গবেষকদের মতে, ইউরোপ, আমেরিকা বা অন্যান্য অঞ্চলেও একই প্রভাব পড়তে পারে, কারণ ভাতের মধ্যে অজৈব আর্সেনিক সাধারণত সর্বত্রই থাকে।
এই গবেষণা আমাদের ভবিষ্যতের একটি বাস্তব ছবি তুলে ধরেছে—যদি আমরা এখনই কার্বন নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণে না আনি, তাহলে খাদ্য নিরাপত্তা ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে আরও বড় সংকটে পড়তে হতে পারে।
“আমরা প্রথম নই যারা পৃথকভাবে কার্বন ডাই অক্সাইড বা তাপমাত্রার প্রভাব পরীক্ষা করেছি,” বলেন জিসকা। “কিন্তু আমরা প্রথম যারা উভয়কে একত্রে মাঠ পর্যায়ে পরীক্ষা করেছি। আর সেটাই আমাদের অবাক করেছে।”
যদিও গবেষণাটি ২০৫০ সালের সম্ভাব্য জলবায়ু পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, তবুও এতে কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যেমন, এতে ধরে নেওয়া হয়েছে যে ২০৫০ সালেও মানুষ ২০২১ সালের মতো একই হারে ভাত খাবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশের অর্থনৈতিক উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে অনেক সময় ভাতের চাহিদা কমে যায়। পাশাপাশি, গবেষণায় আরও ধরে নেওয়া হয়েছে যে ভবিষ্যতেও মানুষ সাদা চালকেই বেশি প্রাধান্য দেবে, যেহেতু সাদা চালে প্রসেসিংয়ের কারণে তুলনামূলকভাবে কম অজৈব আর্সেনিক থাকে। কিন্তু যদি ভোক্তারা বেশি পরিমাণে বাদামী চাল খেতে শুরু করেন, তাহলে আর্সেনিকের মাত্রা আরও বাড়তে পারে।
তবুও, এটি চাল ও আর্সেনিক নিয়ে করা “সবচেয়ে বিস্তৃত গবেষণাগুলোর মধ্যে একটি”, বলে জানান কুইন্স ইউনিভার্সিটি বেলফাস্টের জীববিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক অ্যান্ড্রু মেহার্গ, যিনি গবেষণায় সরাসরি যুক্ত না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এ বিষয়ে কাজ করছেন। তাঁর মতে, “এই গবেষণার প্রমাণ খুবই শক্তিশালী।”
আর্সেনিকের বিষক্রিয়ার ইতিহাস বহু পুরনো। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে মানুষ জানে যে এটি এক মারাত্মক বিষ। স্বাদহীন, গন্ধহীন ও রঙহীন হওয়ায় এটি অতীতে প্রাচীন রোম ও মধ্যযুগীয় ইউরোপে গোপনে হত্যা করার জন্য ব্যবহৃত হতো। তবে খুবই অল্প পরিমাণে তাৎক্ষণিক ক্ষতি না করলেও, দীর্ঘমেয়াদি সংস্পর্শে এটি গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিশেষত, অজৈব আর্সেনিক – যা কার্বনের সঙ্গে সংযুক্ত নয় – এটি শরীরের জৈব অণুর সঙ্গে সহজেই মিশে গিয়ে ক্ষতি করতে পারে। যদিও এটি প্রাকৃতিকভাবে মাটিতে ও পাথরে বিদ্যমান, তবুও খনন, কয়লা পোড়ানো ও শিল্প কারখানার মাধ্যমে এটি পরিবেশে আরও ছড়িয়ে পড়ে।
বিশ্বের বেশ কিছু অঞ্চলে, বিশেষ করে দক্ষিণ আমেরিকা এবং দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়ার কিছু অংশে, ভূগর্ভস্থ জলে এই অজৈব আর্সেনিকের মাত্রা অনেক বেশি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও, প্রায় ৭% ব্যক্তি যারা ব্যক্তিগত কূপ থেকে পানি পান করেন – অর্থাৎ প্রায় ২১ লক্ষ মানুষ – তারা বিপজ্জনক মাত্রার আর্সেনিক গ্রহণ করছেন। বিশ্বজুড়ে, প্রায় ১৪ কোটি মানুষ এমন পানি পান করছেন যার আর্সেনিকের মাত্রা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনার চেয়েও বেশি।
পানির পাশাপাশি, বিশ্বব্যাপী মানুষের খাদ্যাভ্যাসে আর্সেনিকের সবচেয়ে বড় উৎস হলো চাল। এমনকি যেসব অঞ্চলে পানিতে আর্সেনিকের উপস্থিতি কম, সেখানেও চালের মাধ্যমেই অজৈব আর্সেনিক শরীরে প্রবেশ করে।
জিসকা ব্যাখ্যা করেন, পৃথিবীর প্রায় ৭৫% ধানচাষ সেচনির্ভর – আর এখানেই সমস্যা শুরু। আগাছা সাধারণত ধানের ফলন কমিয়ে দেয়। কিন্তু ধান পানিতে জন্মাতে পারে, যেখানে আগাছা টিকতে পারে না। এটাই ধানকে বাড়তি সুবিধা দেয় – এতে আগাছানাশক বা অতিরিক্ত শ্রমের প্রয়োজন হয় না। তবে এর নেতিবাচক দিক হলো, প্লাবিত জমিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা যায়। এই অবস্থা মাটির ব্যাকটেরিয়াগুলিকে এমনভাবে প্রভাবিত করে যে তারা অক্সিজেনের পরিবর্তে আর্সেনিক ব্যবহার করে শ্বাসক্রিয়া করে। ফলে, মাটিতে থাকা খনিজগুলোর সঙ্গে বিক্রিয়ায় আর্সেনিক আরও সহজে গাছের মূল দ্বারা শোষিত হওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।
জিসকা বলেন, “এই পরিবেশে আর্সেনিক কার্যত নিজের উপস্থিতি বাড়িয়ে তোলে।” এই অবস্থায় মাটির জীবাণুগুলোর গঠন পরিবর্তিত হয়, যেখানে আর্সেনিক-পসন্দ ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বিস্তার লাভ করে।
গবেষণায় আরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, যদি তাপমাত্রা ও বায়ুমণ্ডলে CO₂ বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়, তাহলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। জিসকার ভাষায়, “এই ব্যাকটেরিয়াগুলি মাটিতে আরও বেশি কার্বন পাচ্ছে, পরিবেশও উষ্ণ হচ্ছে – এতে তারা আরও সক্রিয় হয়ে উঠছে। এক কথায়, এই পরিবর্তন তাদের অনুকূলে কাজ করছে – যেন তারা উৎসবে মাতছে!”
জিসকা ও তার দল দীর্ঘ ১০ বছরের গবেষণায় দেখেছেন, তাদের নিরীক্ষিত ২৮টি ধানের প্রজাতির মধ্যে প্রায় ৯০% ক্ষেত্রেই এই প্রভাব লক্ষ করা গেছে।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যতই অজৈব আর্সেনিক নিয়ে গবেষণা এগোচ্ছে, ততই এটি মানবদেহের জন্য আরও ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হচ্ছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে, মার্কিন পরিবেশ সুরক্ষা সংস্থা (EPA) নতুন তথ্য ও গবেষণার ভিত্তিতে অজৈব আর্সেনিকের ক্যান্সার সৃষ্টির সম্ভাবনা সম্পর্কে তাদের মূল্যায়ন হালনাগাদ করে। এই নতুন বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, “আর্সেনিক আসলে আগে ধারণার চেয়ে অনেক বেশি বিপজ্জনক একটি কার্সিনোজেন,” জানান জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেলথের পরিবেশ ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক এবং ভাত-আর্সেনিক বিষয়ক গবেষণার অন্যতম লেখক কিভ নাচম্যান। বিশেষ করে, বর্তমানে জোরালো প্রমাণ রয়েছে যে আর্সেনিক কেবল ত্বকের ক্যান্সার নয়, বরং ফুসফুস ও মূত্রাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বাড়ায়।
এছাড়াও, অজৈব আর্সেনিক হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসের সম্ভাবনা বাড়াতে পারে। যদি গর্ভবতী নারী এটি গ্রহণ করেন, তবে এটি গর্ভস্থ সন্তানের মৃত্যু, কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়া, এমনকি স্নায়বিক বিকাশে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির কারণ হতে পারে – যার ফলে আজীবন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
যদিও ব্যক্তিগতভাবে এই ঝুঁকিগুলো খুব বেশি নয়, তবুও জনসংখ্যার স্তরে, বিশেষ করে যারা নিয়মিত অনেক ভাত খান, তাদের জন্য এই ঝুঁকিগুলো অনেক বড় হয়ে উঠতে পারে। EPA-এর সাম্প্রতিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, যদি একজন ব্যক্তি প্রতিদিন প্রতি কেজি ওজনের জন্য ০.১৩ মাইক্রোগ্রাম অজৈব আর্সেনিক গ্রহণ করেন – অর্থাৎ ৬০ কেজি ওজনের কেউ প্রতিদিন ৭.৮ মাইক্রোগ্রাম গ্রহণ করলে – তবে তার মূত্রাশয়ের ক্যান্সার বা ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ৩% বেড়ে যায়।
আর এই ঝুঁকিগুলি ভবিষ্যতে আরও বাড়তে পারে যদি জিসকা ও তার সহকর্মীদের ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হয়। এর মানে, ভাত-নির্ভর দেশগুলোতে এই স্বাস্থ্যঝুঁকি আগামীতে আরও প্রকট হতে পারে।
তাহলে, কেবলমাত্র নির্গমন হ্রাস বা বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ করাই কি যথেষ্ট? নাচম্যান বলেন, “আমরা এমন ভাব দেখাতে পারি না যে আমরা মানুষের ভাত খাওয়া বন্ধ করে দেব – এটা বাস্তবসম্মত নয়।” ভাত শুধু খাদ্য সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশই নয়, বরং দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা অনেক মানুষের জন্য এটি প্রধান ক্যালোরির উৎস – কেউ কেউ তাদের প্রতিদিনের অর্ধেক ক্যালোরিই ভাত থেকে পান। “তাই আমাদের বিকল্প কিছু ভাবতে হবে।”

গবেষকরা এখন ধান চাষের জল ব্যবস্থাপনা পরিবর্তনের মাধ্যমে আর্সেনিক কমানো সম্ভব কি না, তা নিয়ে কাজ করছেন। এক পদ্ধতিতে, ক্ষেতকে ক্রমাগত প্লাবিত না রেখে কিছু সময় প্লাবিত রেখে, আবার তা নিষ্কাশন করে, এরপর আবার প্লাবিত করা হয়। এতে কিছুটা কম অজৈব আর্সেনিক পাওয়া গেছে। কিন্তু এতে আরেকটি সমস্যা দেখা দেয় – ক্যাডমিয়ামের পরিমাণ বেড়ে যায়। মেহার্গ বলেন, “এবং অনেক ক্ষেত্রেই ক্যাডমিয়ামকে আরও বড় হুমকি হিসেবে দেখা হয়।” কারণ এটি স্তন, ফুসফুস, প্রোস্টেট, অগ্ন্যাশয় ও কিডনি ক্যান্সারসহ লিভার ও কিডনির রোগও সৃষ্টি করতে পারে।
গবেষকেরা কম আর্সেনিক শোষণকারী ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টাও করছেন, তবে এখন পর্যন্ত তা উল্লেখযোগ্য সাফল্য পায়নি।
কিছু প্রজাতির ধান স্বাভাবিকভাবে কম আর্সেনিক জমা করে, তাই এই জাতগুলোর চাষ বাড়ানোর চিন্তাও চলছে। আরেকটি সম্ভাব্য পদ্ধতি হলো সেচের পানিতে সালফার যোগ করা, কারণ সালফার ইলেকট্রন শোষণের প্রতিযোগিতায় আর্সেনিককে বাধা দিতে পারে। কিছু ধরনের সার, যেমন পাহাড়ি থাইম ও পাখির সার ব্যবহারে ক্ষেতের মাইক্রোবায়োমে পরিবর্তন এনে আর্সেনিকের মাত্রা কমানোর কিছু সম্ভাবনা দেখা গেছে, কিন্তু এসব পদ্ধতির প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন।
আরেকটি বিকল্প হলো বৃষ্টির পানির উপর নির্ভর করে ধান চাষ করা, যেখানে মাটিতে বা সেচে আর্সেনিকের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম। যেমন, পূর্ব আফ্রিকার বা ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে যেখানে ধান বৃষ্টির পানিতে চাষ হয়, সেখানে ধানে কম আর্সেনিক পাওয়া গেছে। বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, ইউরোপ ও অস্ট্রেলিয়ার ধানে আর্সেনিকের পরিমাণ অনেক বেশি পাওয়া গেছে।
গবেষকদের মতে, মানুষের খাদ্যে আর্সেনিকের উপস্থিতি নিয়ে আরও কার্যকর নজরদারি এবং কঠোর নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজন। “নীতিনির্ধারকরা দীর্ঘদিন ধরে এই ইস্যুটি উপেক্ষা করে আসছেন,” বলেন অধ্যাপক মেহার্গ।
বর্তমানে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (FDA) সাধারণ ভাতে আর্সেনিকের মাত্রার জন্য কোনও নির্দিষ্ট নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেনি, তবে শিশুদের জন্য নির্ধারিত ভাতে আর্সেনিকের সর্বোচ্চ সীমা রেখেছে ০.১ মিলিগ্রাম/কেজি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০২৩ সালে অজৈব আর্সেনিকের সীমা আরও শক্ত করে ০.২ মিলিগ্রাম/কেজি নির্ধারণ করেছে, আর চীনও একই ধরনের সীমা প্রস্তাব করেছে। তবে এসব মান নির্ধারণে এমন সমাজগুলোর কথা বিবেচনায় আনা হয়নি, যারা অন্যান্যদের তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে ভাত খায়।
জিসকা বলেন, “অজৈব আর্সেনিক হ্রাস করার উপায় অবশ্যই রয়েছে, কিন্তু তার জন্য ধান চাষের প্রচলিত পদ্ধতিতে মৌলিক পরিবর্তন আনা জরুরি।” তিনি যোগ করেন, “এই সমস্যা এখনই গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করা উচিত, কারণ এটি বিশ্বব্যাপী বিপুল সংখ্যক মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে।”