ক্লান্তি বা মানসিক চাপ দূর করতে এক কাপ চায়ের তুলনা হয় না। আর চায়ের এক অকল্পনীয় আকর্ষণ আছে। স্বাস্থ্য বজায় রাখতে চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পুষ্টিগুণ কম হলেও এতে কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে, যেমন পলিফেনল, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং ক্যাটেচিন। চায়ে উপস্থিত পলিফেনলের পরিমাণ ২৫% এরও বেশি যা শরীরের ভেতরে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
যেহেতু চা আমাদের দৈনন্দিন ব্যস্ত জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ, তাই এটি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য কতটা উপকারী এবং কতটা ক্ষতিকর তা জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ আসুন চা পানের সুবিধা এবং অসুবিধা সম্পর্কে জেনে নিই।
অনেকেই তাদের ফিগার সোজা রাখার জন্য গ্রিন টি-এর প্রতি বেশি ঝোঁক রাখেন। গ্রিন টি প্রথমে একটি ওষুধ ছিল, পরে একটি পানীয়।
জাপানে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে যে যারা দিনে দুই কাপের বেশি গ্রিন টি পান করেন তারা মানসিকভাবে অনেক বেশি সুস্থ থাকেন। গ্রিন টি-তে ভিটামিন এ, সি, ই, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং বিভিন্ন খনিজ পদার্থ রয়েছে যা প্রতিটি মানুষের শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। নিয়মিত গ্রিন টি পান করলে ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমে।
কিডনি রোগের জন্যও চা অনেক উপকারী। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়। পোকামাকড় কামড়ানোর পর যদি জায়গাটি চুলকায় এবং ফুলে যায়, তাহলে সবুজ চা পাতা দিয়ে ঢেকে রাখলে চুলকানি কমে এবং এটি আরামদায়কও। রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্য উপকারী।
চা এর কিছু উপকারীতা
১। চায়ে এপিগ্যালোকেটচিন-গ্যালেট (EGCG) নামক একটি রাসায়নিক থাকে, যা খুবই কার্যকর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। এটি ভিটামিন সি-এর চেয়ে ১০০ গুণ বেশি কার্যকর। এটি ডিএনএ কোষকে এমনভাবে রক্ষা করে যাতে এটি ক্যান্সারের প্রভাবের মধ্য দিয়ে না যায়।
২। গ্রিন টি তুলনামূলকভাবে ভালো, কারণ এটি চা পাতা বাষ্পীভূত করে এবং শুকিয়ে তৈরি করা হয়।
৩। গ্রিন টি-এর EGCG ইউরোকিনেজ নামক একটি এনজাইমের উৎপাদনে বাধা দেয়। এই এনজাইম ক্যান্সার কোষের সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করে।
৪। শুধুমাত্র চা বেশি উপকারী। দুধ এবং চিনি মিশ্রিত চায়ের স্বাদ আরও ভালো।
তবে হালকা লাল চা সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আরও বলেন।
এছাড়াও, চা রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। ডায়াবেটিসের জন্যও উপকারী। চা লিকার দাঁতের ক্ষয় রোধ করে এবং মাড়িকে শক্তিশালী করে। কাটা জায়গায় গ্রিন টি লিকার লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয়। নিয়মিত চা পান করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয়। পেট পরিষ্কার থাকে এবং মস্তিষ্ক সক্রিয় থাকে।
বিশ্বজুড়ে চা একটি জনপ্রিয় পানীয়। তাই, চায়ের দোকান সকল শ্রেণীর মানুষের কাছে একটি প্রিয় জায়গা। একটি চায়ের স্টলে, ঠান্ডা পানীয় বা চা সরবরাহ করা হয়। এখানে বিস্কুট, রুটি, কলা, পান ইত্যাদিও পাওয়া যায়। এটি বাজার, রেলস্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, স্কুল, কলেজ এমনকি গ্রামেও পাওয়া যায়। লোকেরা এখানে প্রতিনিয়তই চা খেতে আসে। তারা বিভিন্ন বিষয়, গ্রামীণ রাজনীতি, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং বর্তমান বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে। এখন, গ্রীষ্ম হোক বা শীত, সব ঋতুতেই চায়ের স্টল প্রায় সকলকেই আকর্ষণ করে।
তবে চা সঠিক সময়ে পান করা উচিত। আমরা নাস্তা বা দুপুরের খাবারের পরেও চা বা কফি পান করি। অনেকের কাছে এটি একটি নিত্যদিনের অভ্যাস। কারণ চা এবং কফি পান করার অনেক উপকারিতা রয়েছে। তবে, এই অভ্যাসটি স্বাস্থ্যকর নয়। সঠিক সময়ে বা সঠিক উপায়ে চা পান না করলে শরীরে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
