Close

একটুখানি ভালোবাসা

 জেরিন জাহান দিশা 

ইরা খুব‌ই সুন্দরী স্মার্ট ও চঞ্চল মনের এক মেয়ে।(একটুখানি ভালোবাসা)  এক রাতে সে ফেসবুক স্ক্রল করছিল হঠাৎ এক ছেলে সোহান তার আইডিতে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠায়। ইরা সেটা একসেপ্ট করে তারপর শুরু হয় কথাবার্তা। আস্তে আস্তে তাদের সম্পর্কটা ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠে। একদিন সোহান বলল, তোমার একটা ছবি দেবে?ইরা হেসে উত্তর দিলো, দিতে পারি তবে শর্ত একটাই তুমি ও দাও! দুজনেই একে অপরের ছবি পাঠায়। সোহান ইরার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যায়,আর ইরা সোহানের নম্রতা ও চেহারায় মুগ্ধ হয়। ইরা একদিন প্রস্তাব দিলো,”চলো দেখা করি কোথাও।পোড়ানো রাজি হয়। সিদ্ধান্ত হয় কাছের এক রেস্টুরেন্টে দেখা করবে। ইরা তার প্রিয় বান্ধবী সোমাকে সব বলে, ঠিক আছে আমি আমার বয়ফ্রেন্ড কেও নিয়ে আসবো। পরদিন বিকেলে ইরা ও সোমা রেস্টুরেন্টে পৌঁছে সোহানের জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। কিছুক্ষণ পর একটা ভ্যানে করে এক ছেলে আসে, হাতে গোলাপ!সে কাছে এসে বলে,”সরি একটু দেরি হয়ে গেলো।এই ফুলটা তোমার জন্য।সোমা চোখ লাল করে বলে, এই তোর বয়ফ্রেন্ড? দেখতে তো গরিব মনে হচ্ছে!ভাইয়া আপনি শুধু একটা ফুল আনছেন? সোহান শান্তভাবে বলে, সময় কম ছিলো তাই একটা ফুল‌ই আনলাম।তবে ইরা সোহানের ব্যবহার ও কথায় খুশি হয়। রেস্টুরেন্টে বসে সোহান জিজ্ঞেস করে, তুমি কেমন ছেলে কে বিয়ে করতে চাও-কোটিপতি , নাকি সৎ পথে চলে এমন সাধারণ কেউ? ইরা হেসে বলে আমি এমন কাউকে বিয়ে করতে চায় যে সৎ উপার্জনে সংসার চালায়।সে কুঁড়ে ঘরে থাকুক, তবে তার ঘর যেন ভালোবাসায় পূর্ণ থাকে। অন্যদিকে সোমা ও তার বয়ফ্রেন্ড রাজিব আলাদা এক দামি রেস্টুরেন্টে খেতে যায়।সোমা বলে জানো ইরা এক গরিব ছেলেকে ভালোবাসে। দেখতে একদম অচেনা আর সাধারণ। খাওয়া শেষে রাজিব বিল দিতে গিয়ে দেখে ম্যানিব্যাগ সাথে আনেনি। লজ্জায় পড়ে সোমার কাছে টাকা চায়।সোমা রেগে যায়, অপমানিত বোধ করে। রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে রাজিব গাড়ির দিকে আসে।আর ঠিক তখনই ইরা আর সোহান সেখানে আসে। হঠাৎ এক স্টাফ এসে সোহান কে বলে স্যার আপনার গাড়ির চাবি।সোমা হতবাক!বলে রাজিব তুমি তাকে স্যার বললে? রাজিব তখন সত্যি বলে,যে ইনি মিস্টার সোহান স্যার আমি ওনার কোম্পানির সাধারণ একজন কর্মচারী উনি আমার শুধু বস নন আমার একজন ভালো বন্ধু। আমার যেকোনো সমস্যা হলে আমি ওনার সাহায্য নিয়ে থাকি।আর সোমা তোমার সাথে যে বিভিন্ন ধরনের দামি দামি গাড়ি তে করে তোমাকে নিয়ে ঘুরতে নিয়ে যাই।এইসব গাড়িগুলোই স্যারের। স্যারের মতো ভালো মানুষ আর হয়না। উনি অনেক অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ান। সোমা রাজিবের কথা শুনে অনেক লজ্জা পেয়ে গেলো। সোহান কে বলল, ভাইয়া আমাকে ক্ষমা করে দেবেন। আসলে আমি আপনাকে চিনতে পারিনি‌। আমি শুধু আপনার পোশাক আর চেহারা দেখে আপনাকে বিচার করেছি। আমি বুজতে পারিনি আপনি একজন কোম্পানির মালিক। সোহান তখন সোমাকে বলে দেখুন ভুল করা মানুষের স্বভাব।আর এই ভুল থেকে আমরা

যে শিক্ষা পাই।তা কিন্তু আমরা সহজে ভুলি না।আর তোমার আপনার কথাই আমি কিছু মনে করিনি।কারণ আমি আপনাকে চিনিনা সেভাবে।আজকেই প্রথম সাক্ষাত।তাই আপনি আমার সম্পর্কে কি মন্তব্য করলেন তা ভেবে সময় নষ্ট করার ইচ্ছে আমার নেই। আপনি যে আপনার

ভুল বুঝতে পেরেছেন এটাই অনেক তবে কাউকে তার পোশাক আর চেহারা দিয়ে করবেন না। সোমা লজ্জা পেয়ে মাথা নিচু করে র‌ইল।ইরা আর সোহান সোমা এবং রাজিবের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা বেড়াতে গেলো। রাজিব একটা রিক্সা চড়ে বাড়ি চলে গেলো। অন্যদিকে সোমা নিজের

প্রতি নিজের যেন সম্মানটাই করতে পারছেনা।কারন সে আজ অনেক বড়ো ভুল করলো। শুধু পোশাক আর চেহারা দেখে একজন ভালো মানুষ কে অসম্মান করলো।সোমা একটা সিএনজি করে বাড়ি ফিরে আসলো। শুয়ে শুয়ে ভাবতে লাগলো।সে যা ভুল করেছে। সেটার সহজেই ক্ষমা হয়না। সোহান ভাইয়া ভালো ছেলে বলে শতো অপমান করা কথাগুলো হজম করে নিলো।সে যেটা নয় তাকে অসম্মান করা হলো।সোমা রাতে ইরাকে ফোন দিলো ।বলল আমাকে ক্ষমা করে দিস তোরা দুজনে।আমিও আর কাউকে পোশাক বা চেহারা দেখে বিচার করবোনা।ইরা হেসে বলল,তুই না একটা পাগল।তুই তোর ভুল বুঝতে পেরেছিস এটাই অনেক।আর তুই এতো ক্ষমা চাইছিস কেনো।তুই তো আমার বান্ধবী।

ইরা বলল, আচ্ছা বাই সোমা ভালো থাকিস নিজের প্রতি নিজের যত্ন নিস।সোমা ও ইরাকে

বাই বলে ফোন রেখে দিলো।

নাম: মোছাঃ শিরিনা খাতুন সম্পর্ক:মাতা গ্রাম: বড়বাড়ীয়া পুরাতন হাট পাড়া থানা: মিরপুর জেলা: কুষ্টিয়া মোবাইল:01743281966

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Leave a comment
scroll to top