Close

সমাপ্ত-হীন প্রেম (পর্ব-৪)

সমাপ্ত-হীন প্রেম (পর্ব-৪)

স্নিগ্ধ এক সকাল চারপাশ আলো দিয়ে জল-জল করছে। (সমাপ্ত-হীন প্রেম) হালকা ঠান্ডা আবহাওয়া,তার পাশে উঁচু উঁচু বিল্ডিং এর পাহাড় ঘেরা।ঢাকা শহর মানে ইট পাথরের শহর। দমবন্ধ কর এক পরিস্থিতি, এই শহরের অলিগলিতে মানুষের কষ্ট লুকানো। তবে কে কার দুঃখ দেখতে যায়,সবাই নিজ নিজ ব্যস্ততায় মেতে আছে।

তারা এসব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে।ধ্রুব তার সামনে হাঁটছে।তারা তার পিছু পিছু হাঁটছে। ধ্রুব একটি বাড়ির সামনে গিয়ে থেমে গেলো।তারপর তারার দিকে তাকিয়ে বললো।
“বাসা যে নিবে পাজেট কত।

জারা মাথা নত করে ফেললো,তার কাছে কিছু জমানো টাকা ছাড়া এক শত টাকা আছে।যা এই এক সপ্তাহ তাকে চলতে হবে‌। ধ্রুব তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“বলছো না।

তারা মাথা উঁচিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“৩ হাজার আছে।

“ওকে চলো।

তারা কিছু বলতে নিবে তার আগে সেই বাসার ভেতর ঢুকে পড়লো,তারা তার দিকে প্রশ্ন বৃদ্ধ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে তাকিয়ে রইলো।বাসাটা বেশি বড়ো নয় দুই তলা ফ্ল্যাটের একটি বাসা।বেশ পুরোনো ২০ বছর তো হবেই।জারা তার পিছু পিছু হাটা দিলো। ধ্রুব একটি রুমের দরজার সামনে দাঁড়ায়।তারা আগের ন্যায় তাকিয়ে থাকে। ধ্রুব তার দিকে এক পলক তাকিয়ে রুমের কলিংবেলে চাপ দিলে।তখনি তারার কর্ণকূহরে একটি পাখির ডাক ভেসে আসলো।হয়তো সেই কলিং বেলের শব্দ এটা।তারা ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে থাকে।সে ভাবে, এই লোকটা তার সাথে কি করতে চাই? হঠাৎ এতো সাহায্য করছে কেন? যে তার জাত শত্রু তার জন্য সাহায্য বিষয়টা কেমন হয়ে গেলো না।তার ভাবনার মাঝে রুমের দরজা খুলে গেলো।দরজা খুলতে ধ্রুব কোনোদিকে না তাকিয়ে জুতা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে।তারা তার এমন ব্যবহারে অবাক চোখে তাকিয়ে থেকে, বিরক্ত নিয়ে বিরবির করে বললো।
“বেয়াদব কোথাকার।

ধ্রুবর এমন ব্যবহারে সে বিরক্ত হলেও,দরজা খুলে দেওয়া ব্যক্তিটি বিরক্ত হলো না।যেনো এটি নৃত্যদিনের দেখা,তাই অভ্যাস হয়ে গেছে। বরং ব্যক্তিটি তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“মাত্র না গেলি,এখন আবার আসলি যে।

ধ্রুব তার দিকে তাকিয়ে দুষ্টু হাসি ঝুলিয়ে বললো।
“তোর সাথে প্রেম করতে আসছি কোনো সমস্যা।

তার কথা ব্যক্তিটি মুচকি হাসলো।তবে তার এমন নির্লজ্জ কথায়।তারা লজ্জা পেলো তাই সহসা মাথা নত করে ফেললো।চোখ তুলে কোথাও তাকাতে পারছে না।ধ্রুব তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“মিস তার-ছিড়া তোমাকে কি দাঁড়িয়ে থাকার জন্য এনেছি।

তার কথায় ব্যক্তিটি তার দিকে তাকায়,তারা মাথা তুলে ধ্রুবর দিকে তাকায়। ব্যক্তি সাময়িক হেসে বললো।
“আসলে আমারই খেয়াল ছিলো না,আসুন মিস
ভেতরে আসুন।

তারা মাথা নিচু করে ভেতরে প্রবেশ করে,একটি সোফায় বসে তখনি,একটি মেয়ে হাতে চা নিয়ে আসতে আসতে বললো।
“তোমার খেয়াল ছিলো কবে যে আজকে থাকবে।

বলেই তাঁকে চা দিলো‌।চা মেয়েটি তারার পাশে বসে একবার তারার দিকে তাকিয়ে,তারপর ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বললো।
“কি যে ছোটু গার্লফ্রেন্ড নাকি ভাবি।

এমন কথায় তারা তার দিকে অবাক চোখে তাকায়, ধ্রুবর থতমত খেলেও নিজেকে ধাতস্থ করে মেয়েটির দিকে তাকিয়ে বললো।
“কি যে বলো না সাদিয়া আপু,এর মতো রুগ্ন-চন্ডিমেয়ে হবে আমার গার্লফ্রেন্ড।আমার তো ভাবতেও কেমন লাগছে।

তার কথায় তারা অপমান বোধ করলো,হ্যাঁ সে একটু রাগী।সেটা তো আর নিজ দোষে না পরিস্থিতির শিকার হয়ে নয়তো।কি সে দুই বছর আগে এমন ছিলো,কতই না হাসি খুশি জীবন ছিলো,একটা পরিবার ছিলো।তাই সে ধ্রুবর দিকে বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে বললো।
“আপনার মতো নির্লজ্জ লোকের গার্লফ্রেন্ড হতে মার্কা বয়ে গেছে।

ধ্রুব তার দিকে তাকিয়ে চোখ ছোট ছোট করে বললো।
“তোমার কি মনে হয়? তোমার সাথে আমি প্রেম করার জন্য ব্যাকুল হয়ে।

তারা তার ন্যায় তাকিয়ে বললো।
“হ্যাঁ আমি তো আপনার সাথে প্রেম করার জন্য পাগল হয়ে আছি,কয়দিন পর তো পাবনা ভর্তি হবো।

তাদের এমন পায়ে পা মিলিয়ে ঝগড়া করতে দেখে, সাদিয়া ও শরিফ অবাক হয়ে একে অপরের দিকে তাকায়।শরিফ তাদের থামানোর উদ্দেশ্যে ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বললো।
“এই থাম তোরা, বাচ্চা দের মতো ঝগড়া করছিস কেনো।

ধ্রুব তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“আমি কোথায় ঝগড়া করলাম,এই তার ছিঁড়া
তো ঝগড়া করছে।

তারা তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“আমি তার-ছিড়া হলে আপনি গুড়ো-দুধ।একটু আগেও মনে করেছিলাম,আপনি হয়তো ভালো গেছেন এখন দেখছি।আপনি সেই নির্লজ্জ, অসভ্য, বেয়াদব মানুষ আছে। যত্তসব 😤

ধ্রুব কিছু বলতে নিবে তার আগে সাদিয়া বলে উঠলো।
“তার-ছিড়া আর গুঁড়ো-দুধ মানে কি।

ধ্রুব ও তারা দুইজন তার দিকে তাকিয়ে এক
সঙ্গে বলে উঠলো।
“ওর nickname
“উনার nickname

তাদের কথায় সাদিয়া ও শরিফ উচ্চ স্বরে হেসে উঠলো।যেনো তাদের সামনে সবচেয়ে বড়ো মজার কিছু বলা হয়েছে। ধ্রুব ও তারা একে অপরের দিকে চাওয়াচাওয়ি করলো।তারপর তাদের দিকে তাকিয়ে থাকলো।সাদিয়া নিজের হাসি থামিয়ে,নিজেকে ধাতস্থ করে বললো।
“তাহলে এখানে কেনো এসেছিলি? বললি না তো? মাত্র না পড়িয়ে গেলি।

ধ্রুবর এতোক্ষণ ধরে খেয়াল ছিলো না,আসল কথার,কথা।সাদিয়ার কথায় নিজেকে ধাতস্থ করে এক পলক তারার দিকে তাকিয়ে বললো।
“তোমাদের বাসায় নিচ তালায় একটি রুম খালি আছে না,যেটা আমাকে বলে ছিলে।

সাদিয়া উপর নিচ মাথা নাড়লো।শরিফ তার দিকে তাকিয়ে থাকে।তারা এতোক্ষণে বুঝতে পারলো এখানে আসার আসল কারন কি।তার মানে মিষ্টার গুড়ো-দুধ ওতোটাও খারাপ না। সাদিয়া ধ্রুবর দিকে তাকিয়ে বললো।
“রুমটা তো অনেকটা ছোট।

তারা তার দিকে তাকিয়ে তাড়াহুড়ো করে, সাময়িক হেসে বললো।
“সমস্যা নেই,আমি একা থাকবো।

সাদিয়া তার দিকে তাকিয়ে বললো।
“কেনো তোমার বাবা মা থাকবে না।

তারা মাথা নিচু করে ফেললো,সে যে এতিম।বাবা মা যে তাকে ছেড়ে পরকালে চলে গেছে, রেখে গেছে এই সুন্দর তম নামের নিষ্ঠুর দুনিয়াতে‌।যেখানে নৃত্য নতুন দিন লড়াই করে।জীবিকা নির্বাহ করতে হয়।তার চোখে পানি চিকচিক করছে।সকলের তার দিকে তাকিয়ে আছে।

{পরবর্তী পার্টের জন্য অপেক্ষা করবেন}

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Leave a comment
scroll to top