অতি প্রাকৃতিক অভিজ্ঞতা
প্রবল ক্লান্তিতে ৫ মিনিটের মাঝেই ঘুম চলে এল। মাঝরাতে হঠাৎ কলিংবেল বেজে ওঠলো! ২/৩ বার বাজতেই আমার ঘুম পুরোপুরি ভেংগে গেল আর আমি চমকে উঠি ঘড়িতে টাইম দেখতে পেয়ে। রাত বাজে ৩.৩৫। এ কেমন কথা! এত রাতে বেল বাজালো কে!? আমার স্ত্রী নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। তার উঠতে কস্ট হবে ভেবে আমিই নিজেই অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে উঠে দেখতে গেলাম কে বেল বাজালো!
বরিশালের একটি গ্রামে একটি গুস্টি আছে এদের পরিবারের কেউ মারা গেলে ঐ একই দিনই ঐ পরিবারে কোননা কোনভাবে আরেকজন মারা যায় এমনিই একটি কল্পকথা চালু আছে। ২০১৭ সালের ঘটনা। আমার শশুরবাড়ি ওখানেই ( নাম বলতে পারছিনা দু:খিত)। বাচ্চাদের বার্ষিক পরীক্ষার পর বেড়াতে গিয়েছিলাম। একদিন খবর এল পাশের গ্রামের ঐ পরিবারের নাকি একজন গাছে ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে আছে খুবই করুন অবস্থা! আমি কৌতূহল রাখতে পারলাম না। আশেপাশের ২/৪ জন মিলে আমরা দল বেঁধে রওনা দেই দেখার জন্য। ঐখানে পৌঁছাতেই দেখি শতাধিক মানুষের ভীড়। একপর্যায়ে ভীড় ঠেলে কস্টেবিস্টে ঘটনাস্থলে পৌছালাম। দেখি মাঝ বয়েসি এক লোক ফাঁস খেয়ে ঝুলে আছে গাছের অনেক উপরে। আর তার নাক মুখ দিয়ে লালা বা স্বর্দির মত তরল টপ টপ করে পড়ছে। অনেকেই বলছিল এটা খুন, কারন আত্মহননকারী কোন ব্যাক্তি এত উপরে উঠে ফাঁস খায় না, ঐ পর্যন্ত উঠার প্রয়োজনই পড়েনা! ৭/৮ ফুট উপর থেকেই ঝুলে পড়ে অনায়াসেই ফাঁস খাওয়া যায়। দেখে অনেক কস্ট লাগলো একি সাথে ভয়ও করছিল। জানিনা মৃত মানুষ দেখলে মানুষ ভয় পায় কেন! যাই হোক জরুরি কারন বশত: আমাদের আর থাকা হয়নি গ্রামে। জরুরী কাজ পরে যাওয়ায় পরদিনই চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করি। সন্ধ্যায় পৌঁছে গেলাম। জার্নির ক্লান্তিতে সব কিছু ভুলে গেছি। রাতে খাওয়া দাওয়া করে আমি আমার রুমে যথারীতি শুয়ে পড়লাম এবং প্রবল ক্লান্তিতে ৫ মিনিটের মাঝেই ঘুম চলে এল। মাঝরাতে হঠাৎ কলিংবেল বেজে ওঠলো! ২/৩ বার বাজতেই আমার ঘুম পুরোপুরি ভেংগে গেল আর আমি চমকে উঠি ঘড়িতে টাইম দেখতে পেয়ে। রাত বাজে ৩.৩৫। এ কেমন কথা! এত রাতে বেল বাজালো কে!? আমার স্ত্রী নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। তার উঠতে কস্ট হবে ভেবে আমিই নিজেই অত্যন্ত ভয়ে ভয়ে উঠে দেখতে গেলাম কে বেল বাজালো! সন্তর্পণে আমি মেইন দরজার ধারে গেলাম এবং দরজার পিপহোল দিয়ে আগে দেখার চেষ্টা করলাম কে সে মানুষ যে এত রাতে এল!পিপহোলে এক চোখ লাগাতেই আমার কলিজা ছ্যাঁৎ করে উঠলো। শিরদ্বার বেয়ে যেন শীতল স্রোত হয়ে গেল! আমি দেখলাম গ্রামের ঐ ফাঁস খাওয়া লোকটি দরজার ঐ প্রান্তে! একই শার্ট একই লুংগী তবে মুখটা অস্পষ্ট। পিপহোলের গ্লাসে মুখ ভালো আসেনা। তীব্র ভয়ে পড়িমরি করে আমি রুমের দিকে দৌড় দিলাম আর চাদর মুড়ি দিয়ে সাথে সাথে শুয়ে পড়লাম!!! এরপর সারাটা রাত গেল আমার দোয়া দরুদ পড়তে পড়তে। ভাবছিলাম এখনি আবার বেল এর আওয়াজে আসবে! অতপর একপর্যায়ে ঘুমিয়ে পড়লাম। পরদিন বউকে সব ঘটনা খুলে বললাম সে আমাকে আশ্বাস দিল " কিছুই হয়নি এগুলো সব মনের কল্পনা এবং এটা কোন দুস্বপ্ন"!!! প্রিয় পাঠক, এখন প্রশ্ন হলো এমন একটি বাস্তব সম্মত ঘটনা স্বপ্ন বা কল্পনা কিভাবে হয়? স্বপ্ন আর বাস্তবতার মাঝে তফাৎ কি?
What's Your Reaction?
Like
0
Dislike
0
Love
0
Funny
0
Angry
0
Sad
0
Wow
0